রাইসুল ইসলাম রিপন,কামারখন্দ প্রতিনিধি :নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে রাসায়নিক সারের পরিবর্তে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে দিন দিন কৃষকদের মাঝে ভার্মি কম্পোষ্ট উৎপাদন ও ব্যবহারে আগ্রহ বাড়ছে। আর কৃষকদের জৈব সারের ব্যবহার ও উৎপাদন ছড়িয়ে দিতে স্থানীয় কৃষি বিভাগ উদ্বুদ্ধ করছে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, উদ্ভিদ ও প্রাণিজ বিভিন্ন প্রকার জৈব বস্তুকে কিছু বিশেষ প্রজাতির কেঁচোর সাহায্যে ভার্মি কম্পোস্ট তৈরি করা হয়। ভার্মি কম্পোস্ট সারে গাছের অত্যাবশ্যকীয় ১৬টি খাদ্য উপাদানের ১০টি বিদ্যমান।
গবেষণায় দেখা গেছে,আদর্শ ভার্মি কম্পোস্টে জৈব পদার্থ ২৮ দশমিক ৩২ ভাগ, নাইট্রোজেন এক দশমিক ৫৭, ফসফরাস এক দশমিক ২৬, পটাসিয়াম দুই দশমিক ৬০, ক্যালসিয়াম দুই ভাগ, ম্যাগনেসিয়াম শূন্য দশমিক ৬৬, সালফার শূন্য দশমিক ৭৪, বোরন শূন্য দশমিক ছয় ভাগ, আয়রনের পরিমাণ ৯৭৫ পিপিএম, ম্যাঙ্গানিজ ৭১২ পিপিএম, জিঙ্ক ৪০০ পিপিএম এবং কপার ২০ পিপিএম রয়েছে। চলমান ২০২২ ও ২৩ অর্থ বছরে কামারখন্দ উপজেলায় ২৩২ দশমিক ৫৮ মেট্রিক টন ভার্মি কম্পোষ্ট উৎপাদিত হয়েছে।
উপজেলার চর ঝাঐল গ্রামের কৃষক ফজলু শেখ বলেন, ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে কৃষি বিভাগের পরামর্শে মাত্র ১৬টি রিং বসিয়ে ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন শুরু করি। এক বছরে আমি পাঁচ মেট্রিক টন কেঁচো সার উৎপাদন করে বিক্রি করেছি। আমি ১৫ টাকা কেজি দরে কেঁচো সার বিক্রি করি, এতে করে আমার এ বছর প্রায় ৮০ হাজার টাকা লাভ হয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ জেরিন আহমেদ বলেন, উপজেলায় জৈব পদ্ধতিতে তৈরি সার ফসলে প্রয়োগের ফলে চাষাবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। সেই লক্ষ্যে কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে বিভিন্ন জায়গায় ভার্মি কম্পোস্ট উদ্যোক্তা তৈরি করেছি, যা অল্প কিছু দিনের মধ্যে ব্যাপক সাড়া পেয়েছে। তারা রাসায়ানিক সারের পাশাপাশি জৈব সার উৎপাদন করে নিজের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করে অনেক লাভবান হচ্ছে।
তিনি আর বলেন, স্বাভাবিকভাবে জৈব সারের চেয়ে ভার্মি কম্পোস্ট সারে ৫গুন পুষ্টি থাকে। এতে ফসফরাস ও অন্যান্য উপাদান বেশি থাকায় শাক সবজির ক্ষেতে এটি ব্যাপকভাবে কাজ করে। কৃষকেরা ভার্মি কম্পোস্ট সারের ব্যবহারের পরে প্রত্যক্ষ উপকারিতা পাওয়ায় কেঁচো কম্পোস্ট সার তৈরিতে আগ্রহী হচ্ছে এবং এর চাহিদাও দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে।