যুগের কথা প্রতিবেদক: বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে সিরাজগঞ্জ জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জুকে গুলি ও কুপিয়ে হত্যাকান্ডের ঘটনায় সিরাজগঞ্জ-২ (সদর-কামারখন্দ) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী সাবেক জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুর ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরনের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট রফিক সরকার ও সিরাজগঞ্জ আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান এতথ্য নিশ্চিত করে বলেন, তাদের নামে ৩টি হত্যা ও একটি অস্ত্র আইনে মামলা রয়েছে। তিনটিতেই তারা এজাহার নামীয় আসামি। এর মধ্যে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ হওয়া জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু হত্যা মামলায় তাদেরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে প্রেরণ করে পুলিশ। এই মামলায় জান্নাত আরা হেনরী ৭ নাম্বার ও তার স্বামী শামীম তালুকদার লাবু ৯ নাম্বার আসামি। পরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা তার বিরোধিতা করেন ও আমরা বাদীপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ডের পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন করি। পরে বিজ্ঞ আদালত তাদের ৭দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন ও কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
প্রসঙ্গত, ৪ আগস্ট জেলা যুবদলের সহ-সভাপতি সোহানুর রহমান রঞ্জু, ছাত্রদলের সদস্য মো. সুমন ও যুবদলের কর্মী আব্দুল লতিফ গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত (২২ আগস্ট) রাতে নিহত রঞ্জুর স্ত্রী পৌরসভার মাছুমপুর মহল্লার মৌসুমী খাতুন, ছাত্রদলের কর্মী নিহত সুমনের বাবা শহরের গয়লা মহল্লার গঞ্জের আলী এবং একই মহল্লার নিহত যুবদল কর্মী আব্দুল লতিফের বোন মোছা. সালেহা খাতুন বাদী হয়ে এমপি জান্নাত আরা হেনরী ও তার স্বামী জেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান শামীম তালুকদার লাবুসহ আওয়ামী লীগ ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীদের আসামি করে তিনটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এই তিনটি হত্যা মামলা ছাড়াও সরকারি নির্দেশ মোতাবেক তাদের লাইসেন্সকৃত অস্ত্র ও গুলি জমা না দিয়ে নিজ দখলে রাখা এবং পরে তাদের সেই অস্ত্র ও গুলি সদর উপজেলার একটি নির্মাণাধীন মসজিদের সিঁড়ির নিচ থেকে উদ্ধারের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনেও মামলা হয়। এই চারটি মামলার এজাহারভুক্ত আসামি তারা।
এর আগে, মৌলভীবাজার জেলার বর্ষীজোড়া গ্রাম থেকে তাদেরকে গ্রেপ্তার করে র্যাব। পরে তাদেরকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আজ বিশেষ নিরাপত্তার মধ্যে দিয়ে তাদেরকে আদালতে আনা হয়। এসময় তাদের শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন ছাত্র প্রতিনিধি, নিহতের স্বজন ও বিভিন্ন পর্যায়ের মানুষ।