পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলার নীলগঞ্জ ইউনিয়নের পাখিমারা বাজার সংলগ্ন আয়রন ব্রিজটি ভেঙে খালে পড়েছে।
বুধবার (৫ আগস্ট) রাত ১০ টার দিকে হঠাৎ বিকট শব্দ হয়ে ব্রিজটি ভেঙে পড়ে। এ সময় শহিদ হাওলাদার ও ওহাব হাওলাদার নামে দুইজন পথচারী আহত হয়। নির্মাণে ত্রুটি ও ট্রলি দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের খুটি পারাপার করায় ব্রীজের ভীতগুলো নড়বড়ে হয়ে ব্রীজটি ভেঙে গিয়েছে বলে জানা যায়। ব্রীজটি ভেঙে যাওয়ায় নীলগঞ্জ ইউনিয়নের চারটি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ দুর্ভোগে পড়েছে।
সরেজমিনে জানা যায়, ইউনিয়নের কুমিরমারা, মজিদপুর, ফরিদগঞ্জ ও এলেমপুর গ্রাম হতে উপজেলা শহর কলাপাড়া ও স্থানীয় পাখিমারা বাজারে যাতায়তের অন্যতম মাধ্যম এ আয়রন ব্রীজটি। কলাপাড়া উপজেলার সবজি চাহিদা মিটানোর জন্য এ গ্রামগুলোর সবজি চাষিরা অগ্রনী ভূমিকা রেখে আসছে। এ গ্রামগুলোতে প্রায় ৪ হাজার লোক বসবাস করে। প্রতিদিন প্রায় এক হতে দেড় হাজার লোক এ ব্রিজটি দিয়ে যাতায়ত করে থাকে।
এলাকার লোকজনের সুবিধার জন্য গত পাঁচ-ছয় বছর পূর্বে ব্রীজটি নির্মাণ করা হয়। কিন্তু নির্মাণ ত্রুটি ও যানবাহনের অত্যাধিক চাপ পরায় অল্প দিনেই ব্রীজটি লাজুক হয়ে পরে। তদুপরি, কয়েকদিন ধরে বিদ্যুতের খুটি ও ইঞ্জিন চালিত টমটম গাড়ি অবাধে চলাচলা করায় ব্রিজটির ভিত্তি দূর্বল হয়ে যায়।
ফলে, বুধবার রাতে দুই পথচারী সবজি নিয়ে পারাপার হওয়ার সময় ব্রিজটি ভেঙে যায় বলে জানা যায়। ব্রীজটি ভেঙ্গে যাওয়ায় পথচারী শহিদ হাওলাদার ও ওহাব হাওলাদার পানি হতে সাঁতরে উপরে আসে। তবে অন্যকোন পথচারী ছিল কি না তার সঠিক কোন তথ্য পাওয়া যায়নি।স্থানীয় বাসিন্দা ও আলোকিত নীলগঞ্জ সংগঠনের মহাপরিচালক মো. নাঈমুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, অযত্ন ও অবহেলায় ব্রীজটি ভাঙার কারণ হতে পারে। ব্রীজটি উদ্ভোবধনের পর হতে এখন পর্যন্ত প্রতিনিয়ত মটরসাইকেল, অটো গাড়ি, মাল বোঝাই টমটম চলাচল করে আসছে। ইদানিং ট্রলি দিয়ে পল্লী বিদ্যুতের খুটি পারাপার করায় ব্রীজের ভীতগুলো নড়বড়ে হয়ে যায়।
ব্রীজ ভাঙার বিষয়টি শোনার পরে কলাপাড়া উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা এস. এম রাকিবুল আহসান, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনা পারভিন সীমা, উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহর আলী ও নীলগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. নাসির মাহমুদ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
এ বিষয়ে নীলগঞ্জ ইউপি চেয়ারম্যান এ্যাড. নাসির মাহমুদ জানান, চাকামইয়া ইউনিয়নের একটি পুরাতন ব্রীজের মালামাল দিয়ে এ ব্রিজটি নির্মাণ করায় শুরু হতেই এর ভিত্তিগুলো দূর্বল ছিল। তারমধ্যে ভারী যানবাহন ও অতিরিক্ত চাপ পরায় হঠাৎ ব্রিজটি ভেঙে যায়। এবিষয়ে আমি যথাযথ কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি।
কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী প্রকৌশলী মোহর আলী জানান, ব্রীজটি ভেঙে পরায় আমরা পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। পুরাতন ব্রীজের মালামাল দিয়ে ব্রীজটি নির্মাণ ও লবণাক্ততার কারণে ব্রীজটি অল্প দিনেই ভেঙে পড়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। ব্রীজটির গুরুত্ব বিবেচনা ও মানুষের দূর্ভোগ লাগবে অতি দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থা করা হবে বলে তিনি জানান।
কলাপাড়া উপজেলা ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা সহকারী কমিশনার (ভূমি) জগৎবন্ধু মন্ডল বলেন, ব্রীজ ভেঙে পরার বিষয়টি আমি শুনেছি। আমি ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে উর্ধ্বতন কতৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করবো।